চীনের তৈরি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করতে আমেরিকার সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেছেন প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত শুক্রবার আদালতের একটি আইনি আবেদন জমা দেন তার আইনজীবী। আবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প টিকটক নিষিদ্ধ করার বিরোধিতা করেন। বরং ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর রাজনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে চান তিনি। টিকটক নিষিদ্ধের আইনি লড়াই ও নিরাপত্তা ইস্যুতে এই ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটকের ওপর আসন্ন নিষেধাজ্ঞা বিলম্বিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে চান তিনি।

ট্রাম্প ওই অনুরোধ জানানোর পর এ বিষয়ে ১০ জানুয়ারি সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

টিকটক ও বাইটড্যান্সের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে গত এপ্রিল মাসে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকটক বিক্রি, নইলে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে একটি বিলের পক্ষে ভোট দেন কংগ্রেসের আইনপ্রণেতারা, যাতে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এই আইন অনুযায়ী, বাইটড্যান্সকে টিকটক বিক্রি করতে হবে, অথবা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো ক্রেতা পাওয়া যায়নি। টিকটক ও বাইটড্যান্স এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জ করলেও এখন পর্যন্ত সফল হয়নি।

টিকটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ডেটা চীনা সরকারের হাতে যাচ্ছে, যদিও বাইটড্যান্স এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এর আগে চলতি বছরের ১১ মার্চ নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে তিনি একই সঙ্গে বলেন, এ অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বাচ্চাদের কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর এতে শুধু ‘মেটার’ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অবস্থানই শক্তিশালী হবে। ট্রাম্পের শেষ কথাটির সমালোচনা করেছিলেন রিপাবলিকানরা। দেশটিতে টিকটকের ১৭ কোটির বেশি ব্যবহারকারী রয়েছেন।

আরও আগে ২০২০ সালে ট্রাম্প টিকটক ও চীনা মালিকানাধীন আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাট নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে আদালতের বাধায় সফল হননি তিনি। টিকটক নিয়ে ট্রাম্পের বর্তমান অবস্থান তার ওই অবস্থানের একেবারে উল্টো।

টিকটকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইনটি তুলে নিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। তবে আদালত যদি আগামী মাসের শুনানিতে তাদের পক্ষে আদেশ না দেন, তবে অ্যাপটি ১৯ জানুয়ারি থেকে, অর্থাৎ ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার এক দিন আগেই আক্ষরিক অর্থে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।

বিটি/ আরকে