বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের জন্য সম্ভাবনার বিষয়ে আশার সঞ্চার হয়েছে। পোশাক তৈরির কাজের অর্ডার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধির গতি বজায় রাখবে। ক্রেতারা আস্থা ফিরে পাওয়ার প্রেক্ষিতে এবং দেশে তাদের সোর্সিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের সাথে সাথে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বাসস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, ইইউ পোশাক আমদানি (জানুয়ারী-ডিসেম্বর ২০২৪) ১.৫৩% বৃদ্ধি ($৯২.৫৬ বিলিয়ন) পেয়েছে। মোট আমদানির পরিমাণ ৮.৯৮% বৃদ্ধির ফলে গড় ইউনিট মূল্য ৬.৮৩% হ্রাস পেয়েছে।
এই নিম্নগামী মূল্য বাংলাদেশ সহ প্রধান সোর্সিং দেশগুলিকে উল্লেখ যোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে।
বিগত ক্যালেন্ডার বছরের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়কালে বাংলাদেশ থেকে ইইউতে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৯.৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে ছিল ১৮.৮৫ বিলিয়ন ডলার।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ২০২৪ সালে ৪.৮৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ১০.১৮% বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধারের প্রবণতা লক্ষ্যণীয়।
তবে, ইউনিট মূল্যে ৪.৮৪% হ্রাস পেলেও পতনশীল মূল্যের কারণে লাভ বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
মূল্য সংযোজন পোশাকের উৎপাদন, শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা মান মেনে চলা এবং উৎপাদনকারী ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা সহ রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে অবদান রেখেছে। এতে ক্রেতাদের আস্থা জোরদার হয়েছে, ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত হয়েছে এবং রপ্তানি বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।
সারা বছর ধরে ওঠানামা সত্ত্বেও, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ধীরগতিতে শুরু হওয়ার পর, বাংলাদেশ গত অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে উল্লেখযোগ্যভাবে বছর-ভিত্তিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
রপ্তানি বৃদ্ধি ও এই ইতিবাচক প্রবণতা বর্তমান প্রবৃদ্ধির গতিপথকে আরও শক্তিশালী করেছে। লক্ষ্যণীয় যে, ২০২৪ সালে ২০২৩ সালের তুলনায় উন্নতি দেখা গেলেও, ২০২২ সালে অর্জিত স্তরের তুলনায় আয় এখনও কম।
বাংলাদেশের তুলনায়, চীন ২০২৪ সালে ২.৬১% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া যথাক্রমে ১২.৪১% ও ২০.৭৩% উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে ইইউতে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬.০৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে ছিল ২৫.৪০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, তুরস্ক থেকে ইইউতে পোশাক আমদানি ৬.৬৪% হ্রাস পেয়েছে, যা ২০২৪ সালে ১০.০৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ভিয়েতনাম ৪.২১% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রপ্তানিতে ৪.৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া ২০২৪ সালে ইইউ পোশাক বাজার থেকে ৩.৭৯ বিলিয়ন ডলার এবং ৪.২২ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে, ইইউ ভারত থেকে ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, যা ২০২৩ সালের আয়ের তুলনায় ১.৯৭% বেশি।