দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে উরুগুয়ের বিপক্ষে লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্টিনেজ এবং অন্যান্য মূল খেলোয়াড়দের ছাড়াই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে আর্জেন্টিনা। মন্টেভিডিওর সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দলের জয়ের নায়ক ছিলেন তরুণ মিডফিল্ডার থিয়াগো আলমাদা, যিনি ৬৮তম মিনিটে দুর্দান্ত কার্লিং শটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দেন।
ম্যাচ বিশ্লেষণ
আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা সমন্বয়
মেসি এবং লাউতারো মার্টিনেজের মতো তারকা খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামেন। শুরু থেকেই উরুগুয়ে আক্রমণাত্মক ছিল এবং প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটি পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করে। তবে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ দৃঢ়ভাবে তাদের আক্রমণ প্রতিহত করে।
দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা ধীরে ধীরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে। থিয়াগো আলমাদার দুর্দান্ত শট গোলরক্ষক সার্জিও রচেটকে পরাস্ত করে দলকে জয় এনে দেয়। আলমাদার এই পারফরম্যান্স প্রমাণ করে যে, দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতেও আর্জেন্টিনা শক্তিশালীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম।
বিশ্বকাপ নিশ্চিতের পথে আর্জেন্টিনা
এই জয়ের ফলে ১৩ ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ২৮। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে ব্রাজিলের বিপক্ষে ড্র করতে পারলেই সরাসরি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হবে। স্কালোনির দল এখন সপ্তম স্থানে থাকা বলিভিয়ার চেয়ে ১৫ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে এবং বাছাইপর্বে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ বাকি।
আগেরবার মারাকানায় ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারানোর স্মৃতি নিয়ে আর্জেন্টিনা আত্মবিশ্বাসী। অন্যদিকে, ব্রাজিল ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এবং তাদের সামনে আছে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
আঘাত ও নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা
আর্জেন্টিনার জন্য যদিও এই জয় স্বস্তিদায়ক, তবে ব্রাজিল ম্যাচের আগে তাদের বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে। নিকো গঞ্জালেজ উরুগুয়ের নাহিতান নান্দেজের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ করার কারণে লাল কার্ড পেয়েছেন এবং ব্রাজিল ম্যাচে খেলতে পারবেন না। অন্যদিকে, ব্রাজিলকেও গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ছাড়াই মাঠে নামতে হবে। তাদের শুরুর গোলরক্ষক অ্যালিসন, ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল ম্যাগালহায়েস এবং মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারায়েস নিষিদ্ধ থাকবেন।
স্কালোনির প্রশংসা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ম্যাচ শেষে কোচ লিওনেল স্কালোনি তার দলের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ একটি ম্যাচ খেলেছি। যখন আক্রমণ করতে হয়েছে করেছি, আবার যখন প্রতিরক্ষা দরকার ছিল, তখন সেটাও করেছি। আমি শুধু জয়ের জন্য নয়, দলের আচরণেও গর্বিত।”
আর্জেন্টিনা যদি ব্রাজিলের বিপক্ষে হেরে যায়, তবুও যদি বলিভিয়া উরুগুয়েকে হারাতে ব্যর্থ হয়, তবে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। এই পরিস্থিতিতে, স্কালোনি এবং তার দল বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করার জন্য আত্মবিশ্বাসী।
এই জয় আর্জেন্টিনার শক্তি ও গভীরতার প্রমাণ। মেসি এবং অন্যান্য তারকারা না থাকলেও, নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়রা বড় মঞ্চে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।