এশিয়া কাপে অংশ নেবে না ভারত, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এমন খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। পরে জানা গেল এটি আসলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রচলিত আরেকটি গুজব।
ওই খবরের কারণ হিসেবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মহসিন নকভির কথা সামনে আনা হয়েছিল। বলা হয়, যেহেতু বর্তমান এসিসি প্রধান পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মন্ত্রী, তাই এসিসির কোনো টুর্নামেন্টেই ভারত আর অংশ নেবে না।
সোমবার (১৯ মে) সকাল থেকে ছড়ানো ওই খবরকে অসত্য বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব দেবজিত সাইকিয়া।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালকে (এএনআই) দেওয়া এক বিবৃতিতে বিসিসিআই সাইকিয়া স্পষ্ট করে বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকাল থেকে কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বিসিসিআই এশিয়া কাপ এবং নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের খবরের কোনো ভিত্তি নেই। এসিসির কোনো ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে বিসিসিআই এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা পর্যন্ত করেনি, সিদ্ধান্ত নেওয়া তো দূরের কথা।’
এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিসিসিআই ‘মৌখিকভাবে’ এসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা আগামী মাসে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপে অংশ নেবে না, এবং ভবিষ্যতের সব এসিসি টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার বিষয়টি সরকারের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে।
বিসিসিআই খুব ভালো করেই জানে যে ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া এশিয়া কাপ লাভজনক হবে না। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অধিকাংশ স্পন্সরই ভারতীয়। তাছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ ছাড়া এই টুর্নামেন্টের প্রতি সম্প্রচারকারীরাও তেমন আগ্রহী হবে না।
২০২৪ সালে সনি পিকচারস নেটওয়ার্কস ইন্ডিয়া আট বছরের জন্য ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব কিনে নিয়েছে। এবারের আসর বাতিল হলে এই চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
এএসিসির পাঁচ পূর্ণ সদস্য—ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান—সম্প্রচার আয়ের ১৫ শতাংশ করে পায়; বাকি আয় সহযোগী দেশ ও সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার ছায়া ছিল। পাকিস্তান আয়োজক হলেও ভারত সেদেশে গিয়ে খেলতে রাজি হয়নি। ফলে বিসিসিআইয়ের উদ্যোগে ভারতের সব ম্যাচ শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়। তবে ওই আসরে পাকিস্তান ফাইনালে উঠতে পারেনি, আর শিরোপা জেতে ভারত।
২০২৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক ছিল পাকিস্তান। ওই আসরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ভারত আবারও হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব দেয় এবং নিজেদের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে খেলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়। ভারত ফাইনালে খেলায় ওই ম্যাচও পাকিস্তানে আয়োজন করা যায়নি।