সাভারে রানা প্লাজা ধসের এক যুগ আজ। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জন পোশাককর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলাটি এক যুগেও নিষ্পত্তি হয়নি। পুলিশের করা হত্যা মামলাটি গত বছরের ১৫ জানুয়ারি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপর দ্বিগুণের বেশি সময় পার হলেও এটি নিষ্পত্তি হয়নি। আগের মতো মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আটকে রয়েছে।
ইমারত নির্মাণ আইনে করা অন্য মামলার বিচারকাজও ঝুলে আছে। তবে বিচারকাজ দ্রুত শেষ করার প্রত্যাশা রাষ্ট্রপক্ষের।
বর্তমানে হত্যা মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। মামলায় এ পর্যন্ত ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৯৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাভারের রানা প্লাজা ভবন ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে। এর নিচে চাপা পড়েন সাড়ে পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ২৫ এপ্রিল সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’ মামলা করেন।
২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ৪১ আসামির মধ্যে ভবন মালিক সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক, আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবুল হোসেন মারা যান। তিনজনকে বাদ দিয়ে হত্যা মামলায় এখন আসামির সংখ্যা ৩৮। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করার আদেশ দেন।
একই ঘটনায় ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল সাভার থানায় আরেকটি মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবনের মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ১৩৫ জনকে সাক্ষী করা হয়। ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।