দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে বিদায়ী বছরের শেষ মাস তথা ডিসেম্বরে। গত মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা রেকর্ড ২৬৪ কোটি বা ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো একক মাসে এটিই সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) রেমিট্যান্স প্রবাহের এ তথ্য জানানো হয়।
সাধারণত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মত উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়। কিন্তু এবারই প্রথম বড় কোনো উৎসব ছাড়াই প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন।
এর আগে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে। ওই মাসে করোনা ভাইরাস সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যে প্রবাসীরা ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান। ওই বছরের ১ আগস্ট থেকে দেশে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হয়। জুলাইয়ে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে ঈদুল আজহার ভূমিকাই বেশি ছিল।
এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে ২০২৪ সালের জুনে। গত জুনের মাঝামাঝিতেও দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের পর থেকেই দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্রবৃদ্ধির এ ধারা ডিসেম্বরে এসে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। সবমিলিয়ে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ ছয় মাস তথা জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা ১৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবৃদ্ধির এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেকর্ড ঘটবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ২০২০-২১ অর্থবছরে। করোনা ভাইরাস সৃষ্টি দুর্যোগের ওই বছরে প্রবাসীরা রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠান।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে আসে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বেড়ে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরে ২৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিটি/ আরকে