গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা চলতি মাসেই নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা দেবেন বলে জানা গেছে। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম যে সেই দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন তা অনেকটাই নিশ্চিত। সে জন্য তিনি কয়েকদিনের মধ্যে উপদেষ্টার পদ ছাড়ছেন। উপদেষ্টা পরিষদে থাকা বাকি ছাত্র প্রতিনিধিরাও দায়িত্ব ছাড়তে পারেন বলে নাহিদ ইসলাম নিজেই গতকাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশে বহু দল গঠন হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোরই অস্তিত্ব নেই। বর্তমানে টিকে থাকা দলগুলোর মধ্যে কোনোটি ডান, কোনোটি বামপন্থী আদর্শের। কোনো দল জাতীয়তাবাদকে প্রাধান্য দেয়, আবার কোনোটি ধর্মনিরপেক্ষ কিংবা ধর্মভিত্তিক আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়েছে। গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীরা এবার যে নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে হাজির হচ্ছেন সেটি ডান বা বামপন্থী নয়, মধ্যপন্থা অবলম্বন করবে বলে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে।
এদিকে ছাত্রদের দল গঠন নিয়ে শুরুর দিকে কয়েকটি রাজনৈতিক দল আপত্তি জানায়। পরবর্তী সময়ে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ছাত্রদের পদত্যাগ করে দল গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এ বিতর্কের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে নিশ্চিত করা হয়, যারা রাজনৈতিক দল গঠনে যুক্ত থাকবেন তারা সরকার থেকে আগে পদত্যাগ করবেন।
রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়াটি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই শুরু করেন ছাত্ররা। এরই মধ্যে চলে গেছে ছয় মাসের বেশি সময়। তবে দেশ পুনর্গঠনে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীরা গঠন করেন জাতীয় নাগরিক কমিটি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তাদের পক্ষ থেকেই গঠিত হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দলটি।
এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রদের নেতৃত্বে একটা নতুন রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনা বা আলোচনা রয়েছে। সে দলে অংশগ্রহণ করতে হলে সরকারে থেকে সম্ভব নয়। আমি যদি সে দলে যাই তাহলে সরকার থেকে পদত্যাগ করব। আমরা (ছাত্র উপদেষ্টারা) চিন্তাভাবনা করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবেও চিন্তাভাবনা করছি। যদি মনে করি, সরকারের থেকে আমার মাঠে যাওয়া ও জনগণের সঙ্গে কাজ করা বেশি জরুরি, তখন আমি সরকারের দায়িত্ব ছেড়ে দেব এবং দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হব। আর কয়েকদিনের ভেতরে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সবাই জানতে পারবেন। রাজনৈতিক দল গঠন আর ভোটের রাজনীতি যে ভিন্ন, তা জেনেই মাঠে নামা হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অধ্যাদেশের মাধ্যমে নয়, বরং বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আর সেটা হতে পারে নির্বাচনের আগেই। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করায় সরকারের সঙ্গে দূরত্ব কমেছে।’
বিটি/ আরকে