কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট: গবেষণা যাচাই, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও ভবিষ্যৎ গবেষণার দিকনির্দেশনা- শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে জাপানের সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন (এসপিএফ) এবং ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ওয়াইপিএসএ)।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রোহিঙ্গা সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও সমাজের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ছোট এবং জনবহুল দেশ, তাই এ চাপ আর নেওয়া সম্ভব নয়। তাদের নিজ দেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান।”
কর্মশালার শুরুতে ড. অবন্তী হারুন রোহিঙ্গা সংকটের কারণে পরিবেশ, সমাজ ও নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি জানান, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানসহ নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ জড়িয়ে পড়ছে, আবার তারাও নির্যাতন ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. ইমাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মানবেবতর জীবনযাপন করছে এবং তারা নানা কুসংস্কার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে, যা দেশের নিরাপত্তা ও সামাজিক কাঠামোর জন্য উদ্বেগজনক। তিনি তাদের মানবিক ও নিয়ন্ত্রিত জীবন নিশ্চিত করার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞ হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত তারেক করিম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। এই বিষয়ে অপরাজনীতি এবং দ্বিধা বিভক্ত না হয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাসরুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. দিপু সিদ্দিকী, ওয়াইপিএসএ-এর কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্র্যাক, ইউএনসিআর, ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি এবং ‘অগ্রযাত্রা’-র প্রধান নীলিমা আক্তার চৌধুরী।
দুই পর্বে বিভক্ত এই কর্মশালার প্রথম পর্বে ইপসা (ওয়াইপিএসএ) কার্যালয়ে পরিচিতি ও মতবিনিময় হয়, এবং দ্বিতীয় পর্বে আরআরআরসি কার্যালয়ে গবেষণা উপস্থাপন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান শেষে বক্তারা রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
বিটি/ আরকে